তোমার মা-বাবা কি তোমাকে বোঝে না? সবসময় বকা দেয়? নাকি তোমার স্বাধীনতার পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়? ভাবছো, কীভাবে তাদের সাথে সম্পর্ক ঠিক করা যায়? চিন্তা করো না, কারণ তোমার জন্য রয়েছে হাজার বছরের প্রাচীন কিন্তু একদম প্রাসঙ্গিক কিছু টিপস, সরাসরি বেদ থেকে!
বেদ শুধু পুরনো শাস্ত্র নয়, এটি জীবনের গাইডবুক! এর জ্ঞান চিরন্তন এবং একদম প্র্যাকটিক্যাল! তো চল, জেনে নেই বেদের ৫টি সহজ উপায় যা তোমার মা-বাবার সাথে সম্পর্ককে করে তুলবে আরও সুন্দর, গভীর, আর #NoMoreDrama!
১. “শ্রদ্ধা”, কেবল ভান নয়, সত্যিকারের সম্মান!
“আমার বাবা-মা খুবই পুরনো চিন্তাধারার, তারা কিছুই বোঝে না!”, হ্যাঁ, আমরা সবাই কোনো না কোনো সময় এমনটা ভেবে থাকি। কিন্তু বেদ বলে, মা-বাবা শুধু জন্মদাতা নন, তারা জীবনের প্রথম গুরু। “মাতৃ দেবো ভব, পিতৃ দেবো ভব”, মানে, মা-বাবাকে দেবতার মতো সম্মান করো।
কী করবে?
- তাদের কথা শোনো, তাদের দৃষ্টিভঙ্গি বোঝার চেষ্টা করো।
- তাদের অভিজ্ঞতাকে অগ্রাহ্য কোরো না।
- ছোট ছোট কাজে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করো (একটা ছোট “ধন্যবাদ” ম্যাজিকের মতো কাজ করে! )
২. “সত্যনিষ্ঠা”, মিথ্যে বললেই বিপদ!
বেদে বলা হয়েছে, “সত্যমেব জয়তে”, সত্যের জয় হয়। যদি তুমি মা-বাবার সাথে সত্যবাদী হও, তারা তোমার উপর বিশ্বাস রাখতে পারবে।
কী করবে?
- মিথ্যে বলে ধরা পড়ার ভয় এড়িয়ে সত্য বলা অভ্যাস করো।
- ভুল করলে স্বীকার করো, কারণ মা-বাবা তোমার শত্রু নয়!
- ট্রাস্ট একবার ভেঙে গেলে ফেরত পেতে অনেক কষ্ট হয়, তাই প্রথম থেকেই সততার পথ নাও!
৩. “সেবা”, ছোট ছোট কাজে সাহায্য করো!
বেদে বলা হয়েছে, “সেবা পরম ধর্ম”, মানে, নিঃস্বার্থভাবে সেবা করাই শ্রেষ্ঠ ধর্ম। মা-বাবার জন্য বড় কিছু করতে হবে না, ছোট ছোট কাজেই তাদের খুশি করা সম্ভব!
কী করবে?
- ঘরের ছোটখাটো কাজ নিজে থেকে করো (যেমন, নিজের ঘর গুছিয়ে রাখা, বাসন ধোয়া, বাজারে সাহায্য করা)
- তাদের জন্য কোনোদিন চা বা নাশতা বানিয়ে “সারপ্রাইজ” দাও!
- অসুস্থ হলে যত্ন নাও, তাদের স্বাস্থ্যের খোঁজ রাখো।
৪. “সংযম”, রাগ কমাও, ভালোবাসা বাড়াও!
তুমি কি মা-বাবার সাথে কথায় কথায় রেগে যাও? একদমই উচিত নয়! বেদে বলা হয়েছে, “যঃ সংযতঃ স জীবতি”, সংযমী মানুষই প্রকৃত সুখী।
কী করবে?
- রেগে গেলে ১০ পর্যন্ত গুনো, তারপর কথা বলো!
- মা-বাবার কড়া কথা শুনেও নিজেকে শান্ত রাখার চেষ্টা করো।
- যুক্তি দিয়ে বোঝানোর চেষ্টা করো, ঝগড়া করে নয়!
৫. “সতসঙ্গ”, ভালো সঙ্গ পছন্দ করো!
বেদ বলে, “সঙ্গাত সঞ্জায়তে কামাঃ”, তুমি যার সাথে মিশবে, তার মতোই হয়ে যাবে! যদি তুমি এমন বন্ধুদের সাথে থাকো যারা সবসময় মা-বাবাকে অবহেলা করে, তাহলে তুমিও ধীরে ধীরে তাদের বিরুদ্ধে হয়ে যাবে!
কী করবে?
- এমন বন্ধু খুঁজো যারা পরিবারকে গুরুত্ব দেয়।
- মা-বাবার সাথে সময় কাটানোর চেষ্টা করো (উদাহরণস্বরূপ, উইকএন্ডে তাদের সাথে একটা ফ্যামিলি মুভি নাইট প্ল্যান করো )
- কোনো বিষয় নিয়ে যদি দ্বন্দ্ব হয়, তাহলে মা-বাবার দৃষ্টিভঙ্গিটা জানার চেষ্টা করো, শুধুই বন্ধুদের মতামতের উপর নির্ভর কোরো না।
শেষ কথা: মা-বাবা তোমার বিরুদ্ধে নয়, তোমার পক্ষে!
তুমি যখন তাদের বোঝার চেষ্টা করবে, তারা তোমার স্বাধীনতাকেও সম্মান করতে শিখবে! সম্পর্ক মজবুত করা দুই পক্ষেরই দায়িত্ব। প্রথম পদক্ষেপটা তুমি নাও, কারণ পরিবর্তন শুরু হয় তোমার থেকেই!